20 May 2024, 11:28 pm

সরকারি টাকায় কেনা এসি নিয়ে গেলেন হবিগঞ্জের বাহুবল থানার সদ্য বিদায়ী ওসি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : হবিগঞ্জের বাহুবল থানার সদ্য বিদায়ী ওসি রাকিবুলের বিরুদ্ধে থানার এসিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। থানার সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য যারা এসব জিনিস উপহার দিয়েছেন তারাও বিরূপ মন্তব্য করছেন।

জানা যায়, ২০২১ সালের অক্টোবরে বাহুবল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন রাকিবুল ইসলাম খান। তিনি যোগদানের পর ওসির অফিস কক্ষ ও বাসার জন্য টিআর প্রকল্প থেকে দুই টনের দুটি এসি বরাদ্দ দেন হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ। বরাদ্দ পাওয়ার পর বাহুবল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা তাজউদ্দিন আহমেদ ওসির অফিস কক্ষ ও তার সরকারি বাসভবনে দুটি এসি স্থাপন করে দেন।

কিন্তু সম্প্রতি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী এক আদেশে বাহুবল থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম খানকে প্রত্যাহার করে হবিগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেন। এরপর পরই বদলিকৃত ওসি রাকিবুল ইসলাম খান সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দেওয়া এসি, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে যান।

গত ৭ আগস্ট পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী স্বাক্ষরিত এক আদেশে ওসি রাকিবুল ইসলাম খানকে প্রথমে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এর কয়েকদিন পর তাকে মাধবপুর থানায় পদায়ন করা হয়। বদলির সঙ্গে সঙ্গে সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজের সরকারি অনুদানের টাকায় বরাদ্দ দেওয়া বাহুবল মডেল থানার এসি খুলে নিয়ে যান ওসি রাকিবুল ইসলাম খান। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অন্যান্য আসবাবপত্রও নিয়ে যান।

উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, থানার সৌন্দর্যবর্ধন ও থানায় যিনি ওসি হয়ে আসুক তিনি যেন সুবিধাটা ভোগ করতে পারে সেজন্য এসিসহ জিনিসপত্রগুলো দেওয়া হয়। কারো ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়। শুনেছি তিনি সেগুলো নিয়ে গেছেন, এটা ঠিক হয়নি। এগুলো উনাকে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া হয়নি, তাঁর চেয়ারটাকে সম্মান করে দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বাহুবল মডেল থানায় সদ্য যোগদান করা ওসি মো. মশিউর রহমান বলেন, আমি এই থানায় যোগদান করেছি মাত্র কয়েকদিন হলো। যোগদানের পর অফিসে এবং বাসায় কোথাও এসি পাইনি। সরকারি অনুদানে কোনো এসি বা অন্যান্য জিনিস ছিল কিনা তাও আমার জানা নেই। আর এসি বা অন্যান্য জিনিসপত্র আগের ওসি স্যার নিয়েছেন কিনা তাও আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে জানতে সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ বলেন, আমি সরকারি বরাদ্দে এসি অফিসের জন্য দিয়েছি। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য দেইনি। কিন্তু সাবেক ওসি তা খুলে নেবে কেন? গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক অনুষ্ঠান শেষে ইউএনও অফিসে চা চক্রের একপর্যায়ে বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন দলীয় কর্মী আমার নজরে আনেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওসি রাকিবুল ইসলাম খান বলেন, অফিসে কোনো এসি ছিল না। বাসার এসিটি ছিল আমার ব্যক্তিগত টাকায় কেনা। তাই খুলে নিয়েছি। এছাড়া আর কোনো জিনিসপত্র আমি নেইনি।

এদিকে ওসির অফিসকক্ষে এসি থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করলেও ছবিতে স্পস্ট দেখা যাচ্ছে এবং খুলে নেওয়ারও আলামত বিদ্যমান রয়েছে এখনো। এতো প্রমাণ থাকার পরও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।

থানায় কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অফিসে এসিসহ আরও অনেক আসবাবপত্র ছিল। ওসি স্যার বদলি হওয়ার পর সেগুলো তার লোকজন দিয়ে নিয়ে গেছেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 5064
  • Total Visits: 755844
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১২ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১১:২৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018